বইপরিচিতি
বাদাবন সুন্দরবনের পাশে কৃষিজীবী মানুষদের বাস। এলাকাটি নোনা ও মিষ্টি পানির সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা। গত শতকের সত্তরের দশকে (১৯৬১-১৯৭০) এই অঞ্চলে নদী-বাঁধ দিয়ে মিষ্টি পানির আবহন গড়ে তোলা হয়। আবার নব্বইয়ের দশকে (১৯৮১-৯০) বহিরাগতরা সেই বাঁধ জোর-জবরদস্তি করে কোটে নোনা পানি প্রবেশ করিয়ে চিংড়ি চাষ শুরু করে। এতে এলাকার কৃষিজীবী পরিবারগুলোর জীবনে দুর্দশা নেমে আসে। এক সময়ে চিংড়িচাষীদের দাপট কমে। ততোদিনে বাঁধকাঁটা-ছেঁড়ার দুর্বলতর হয়। ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে, জলোচ্ছ্বাসের ধাক্কায় বাঁধ ভাঙে। মানুষ ও প্রকৃতির এই দুইয়ের দাপটে বাদার পাশের এক গ্রামের অতি সাধারণ পরিবারের সদস্য শিবু। সহজ-সরল শিবু সমাজে ও প্রকৃতির কাছে পরাস্ত হওয়া এক মানুষ। তার পারিবারিক জীবনের গল্পটিও আর স্বাভাবিক থাকে না। ‘শিবু’র স্ত্রী নিরাপত্তার খোঁজে ঘর ছাড়ে। শিবুর আর এক সন্তান মনোবেদনায় আত্মঘাতি হয়। মানুষ ও প্রকৃতির এই দুই রোষে ক্ষত-বিক্ষত শিবু’র জীবনের গল্পই-রাহুগ্রাস।
লেখক পরিচিতি
গৌরাঙ্গ নন্দী। পেশায় সাংবাদিক, নেশায় লেখক ও গবেষক। পরিবেশ, সমাজ ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আগ্রহ। প্রকৃতির কাছে শেখা এই সাংবাদিকের জন্ম খুলনায়। ১৯৬৩ সালের ২ এপ্রিল; বেড়ে ওঠা, লেখাপড়া ও পেশাগত জীবনও খুলনায়। ছাত্রাবস্থায় টিউশনির মধ্যে দিয়ে কর্মজীবন শুরু। সাংবাদিকতার পেশাগত জীবন ১৯৮৬ সাল হতে, স্থানীয় খুলনা থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রের মাধ্যমে। ১৯৯৩-তে এনজিওতে চাকুরি। আবারও ১৯৮৮-র শেষের দিকে ঢাকা থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রে যোগ দিয়ে সংবাদপত্রের চাকুরিতে ফেরা। প্রকাশিত গ্রন্থ। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস : কপোতাক্ষ পাড়ের কান্না (২০২১) ও উনসত্তরের রক্তবীজ (২০১৮)।
মুক্তিযুদ্ধ: বৃহত্তর খুলনার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস (২০১৬); দেয়াড়া গণহত্যা (২০১৫) ও বাদামতলা গণহত্যা (২০১৫)। প্রবন্ধ/নিবন্ধ: সুন্দরবন উপকূলের কথকতা (২০২০) ও কালের আয়না (২০১৮)।
জীবনী : মানবপ্রেমী আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় (২০১৭)।
গবেষণা : শ্রিম্প: প্রোফিট পর হুম (২০২৩), বিষের জ্বালা (২০১৮), উপকূলে নিরাপদ পানির অকাল (২০১৩); জালের ফাঁদে (২০১১); চিংড়ি ও জন-অর্থনীতি; কার লাভ কার ক্ষতি (২০০৭); ও মানবাধিকার আন্দোলন : প্রেক্ষিত উপকূলীয় প্লাবন ভূ অঞ্চল (২০০৫)
সম্পাদনা : মানিক সাহা স্মারক গ্রন্থ (২০০৬)
Reviews
There are no reviews yet.